Outlinebangla: ওষ্ঠরঞ্জনী বা ইংরেজিতে লিপস্টিক (Lipstick) সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত একটি বিউটি প্রোডাক্ট। ঠোঁটের সৌন্দর্য বাড়াতে ও ঠোঁট আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে লিপস্টিকের প্রয়োজনীয়তা সবচেয়ে বেশি। তাছাড়া যারা সাজতে খুবই পছন্দ করেন তাদের কাছে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রোডাক্ট। এটি ছাড়া সাজ কখনোই সম্পূর্ণ হয় না। নারীদের কাছে লিপস্টিকের (Lipstick) গুরুত্ব যেমন আছে, তেমনি সাজসজ্জার এই অন্যতম অনুসঙ্গের আবেদন রয়েছে পুরুষদের কাছেও।
নানান বিবর্তনের মধ্যে দিয়ে লিপস্টিকের (Lipstick) পথ চলা:
খ্রীস্টপূবাব্দ ২০০-২৫০ মিশরীয় সভ্যতার মানুষজন প্রথমের দিকে লিপস্টিককে পতিতাদের চিহ্ন বলে মনে করত। পরবর্তীকালে সেই ধারণার বদল ঘটতে দেখা যায়। ৭০০ খ্রীস্টপূবাব্দ নাগাদ উচ্চশ্রেণির মহিলারা নিজেদের ঠোঁটে লাল রঙ লাগাতে শুরু করলেন। সেই সময়ে ঠোঁটে রঙ দেওয়াটা ছিল আভিজাত্যের পরিচয়। আজ থেকে হাজার বছর আগে চিনের মহিলারাও ফুলের রঙ দিয়ে ঠোঁট রঙ করতেন। তখন একরকম রীতি ছিল এটি। পরের দিকে অস্ট্রেলিয়ায় লিপস্টিক সম্পর্কিত একটি কু-সংস্কার তৈরি হয়েছিল। সেখানকার মহিলারা বিশ্বাস করতেন, ঠোঁটে রঙ মাখলে নাকি খারাপ শক্তির হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। কিন্তু তখনও লিপস্টিক নামক এই আধুনিক দ্রব্যের প্রচলন শুরু হয়নি।
আরও পড়ুনঃ Gastric Problems: ঘরোয়া উপায়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে যেভাবে মুক্তি পাবেন
সালটা ১৮৮০ সালে প্রথমবার লিপস্টিক নামক শব্দটির ব্যবহার করা হয়। প্যারিসের একটি সুগন্ধি প্রস্তুতকারক সংস্থা ১৮৮৪ সাল নাগাদ বাজারে প্রথমবার লিপস্টিক আনে। কু-সংস্কার আভিজাত্যের সমস্ত বাঁধন ছিঁড়ে বেরিয়ে লিপস্টিক তখন শুধুমাত্র সৌন্দর্যের প্রতীক। সেই সময়ে লিপস্টিকের রঙ বলতে জনপ্রিয় ছিল কালচে লাল। ১৯৫০ সালে হ্যাজেল বিশপ নামে এক কম্পানি লিপস্টিককে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি দেয়। এরপর সওর ও নব্বই এর দশকে গাঢ় খয়েরি ও কালো শেডের লিপস্টিক জনপ্রিয়তা পায়। তারপর শুরু হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা । ২০০০ সালের আশেপাশে ত্বকের PH এর মাএা বজায় রেখে তৈরি হয়েছে লিপস্টিক। ২০১০ এরপর থেকেই হুডা বিউটি, NYX কসমেটিকস নিয়ে আসে লিকুইড লিপস্টিক যা এখনও অন্যতম ফ্যাশন স্টেটমেন্ট।
আরও পড়ুনঃ Bengalis rice sleep: বাঙালির ভাত ঘুম; তাড়ানোর উপায় খুঁজছেন, দেখুন তাহলে
লিপস্টিকের (Lipstick) অবয়ব:
সাধারণত মোম, রং, রাসায়নিক দ্রব্য ও তেল দিয়ে তৈরি হয় লিপস্টিক। একটি লিপস্টিকের ডায়ামিটার ১০ মিলিমিটার। ৫০ মিলিমিটার দীর্ঘ হয় এটি।
আরও পড়ুনঃ ত্বকের যত্ন মানে শুধুমাত্র রূপচর্চা নয়, তাহলে কিভাবে নেবেন ত্বকের যত্ন!
লিপস্টিকের রঙ (Lipstick Color) দেখে বোঝা যাবে আপনার মনের অবস্থা:
১) নারীরা যে লিপস্টিক লাগিয়ে থাকেন তারও আছে বিশেষ কিছু অর্থ। অনেকেরই হয়তো সেটি জানা নেই। ভিন্ন ভিন্ন রঙের লিপস্টিক (Lipstick Color) প্রকাশ করে ভিন্ন ভিন্ন ভাষা ও আকর্ষণ করার ক্ষমতা। লিপস্টিকের রঙ (Lipstick Color) দিয়ে অনেক ক্ষেত্রে প্রকাশ পায় আপনার ব্যক্তিত্ব ও মনের ভাব।
২) বিশেষজ্ঞদের মতে, যারা লাল রঙের লিপস্টিক (Lipstick Color) পড়তে পছন্দ করেন তারা স্বাধীনচেতা হন। অন্যান্যদের তুলনায় অনেক বেশি সাহসী ও উদ্যমী হন।
৩) যারা গোলাপি রঙের লিপস্টিক (Lipstick Color) ব্যবহার করেন তারা অনেক আবেগী হয়ে থাকেন। কারও কঠিন কথা একেবারেই মেনে নিতে পারেন না। এমনকি কটু কথা শুনলে তাদের চোখে জল চলে আসে।
৪) সমাজের উল্টো স্রোতে যারা হাঁটতে ভালোবাসেন তারা নাকি ব্রাউন শেডের লিপস্টিকে ঠোঁট রাঙাতে চান (Lipstick Color)। যে কোনো বিষয়ে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার সাহসিকতাও থাকে তাদের।
৫) ন্যুড শেডের লিপস্টিক যারা পড়তে পছন্দ করেন তারা অত্যন্ত শান্তিপ্রিয় হন। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে তারা নিজেদের সৌন্দর্য নিয়ে অত্যন্ত সচেতন।
৬) সাধারণত কেউই কালো, নীল বা বেগুনি রঙের লিপস্টিক পড়েন না। তবে যারা গাঢ় নীল বা বেগুনী রঙের লিপস্টিকে (Lipstick Color) ঠোঁট রাঙান তারা অত্যন্ত সাহসী বলে বিবেচিত হন। বিশেষজ্ঞদের দাবি তারা নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল।
লিপস্টিক কেবলমাত্র ঠোঁটের জন্যেই প্রয়োজনীয় নয়, এটি দিয়ে মুখের অন্যান্য মেকআপ ও সম্পন্ন করা যায়। মেকআপ করার সময় আমরা ন্যুড লিপস্টিকে কনসিলার হিসাবে হালকা শেডের পিঙ্ক লিপস্টিকেকে ব্লাশার হিসাবে ব্রাউন লিপস্টিকেকে কনট্যর বা ব্রোঞ্জার হিসাবে এবং রঙিন আইলাইনার বা আইশ্যাডো হিসাবেও লিপস্টিকেকে ব্যবহার করতে পারি।