Outlinebangla: গোটা বিশ্ব জুড়ে প্রত্যেক বছর নিদিষ্ট করে নারীদের সম্মান জানাতে ৮ই মার্চ দিনটিকে পালন করা হয় ‘আন্তর্জাতিক নারীদিবস’ হিসাবে (International Women’s Day)। আমাদের দেশ এবং আশেপাশের বিভিন্ন দেশগুলোতেও নারীদের সমনাধিকার সুনিশ্চিত করতে, ও পাশাপাশি লিঙ্গবৈষম্য দূর করতে এই দিনটি পালিত হয় (International Women’s Day)। নারীদের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করা, শ্রদ্ধা জানানো এবং সর্বোপরি তাদের কাজের প্রতি সম্মান জানানোয় এই দিনটির উদযাপন করা হয়। কিন্তু আপনি কি জানেন কেন পালন করা হয় নারীদিবস! (International Women’s Day) কি এর বৃতান্ত? কবেই বা প্রথম পালিত হয়েছিল নারীদিবস? চলুন জেনে নিন।
নারীদিবসের ইতিহাস (History of International Women’s Day):
জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থার তথ্য অনুসারে, নারীদিবসের প্রথম সূচনা ঘটেছিলো উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপে নারী শ্রমিকের সমানাধিকার আদায়ের উদ্দেশ্যে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসের পূর্বনাম (আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস) (International Women’s Day)। সালটা ১৮৫৭, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের (New York) রাস্তায় মজুরিবৈষম্য, কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, কাজের অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছিলেন সুতা কারখানার কর্মরত নারী শ্রমিকেরা। যার জেরে নারী শ্রমিকদের উপর দমন-পীড়ন চালায় লেঠেল বাহিনী। সেই থেকেই নারী শ্রমিকদের অদম্য জেদ ও সাহসিকতা ইতিহাসে জায়গা করে নেয়।
Women’s Day
United Nations Educational, Scientific and Cultural Organisation বা UNESCO-র তরফে জানা গিয়েছে, ১৯০৯ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়। এবং পরে ১৯১১ সালে এর পর অস্ট্রিয়া, জার্মানি, সুইৎজারল্যান্ডে নারী দিবস পালিত হল ১৯ মার্চ। এবং ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ৮ মার্চ পালিত হতে লাগল নারী দিবস। ১৯৭৫ সাল থেকে জাতিসংঘ ৮ মার্চ দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ হিসেবে পালন করছে। এবং এই দিনটিকে পালনের জন্য জাতিসংঘ বিভিন্ন রাষ্ট্রকে আহ্বান জানায়। এরপর ১৯৭৭ সালের পর থেকেই এই দিনটি নিদিষ্ট যে কোনো থিমের উপর নির্ভরশীল হয়ে পালিত হতে শুরু করেছিল কারণ এইদিন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ মহিলাদের সাধারণ অধিকার এবং বিশ্বশান্তির কথা ভেবে দিনটি উদযাপনের কথা দ্বিতীয়বার ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুনঃ Jewelry: গয়না কি শুধুই নারীর?
নারীদিবসের গুরুত্ব (Significance of International Women’s Day):
আমাদের সমাজে সবরকম কাজ, সেটা শিল্প হোক বা সাহিত্য সবক্ষেত্রেই নারীদের সমনাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে, লিঙ্গবৈষম্য দুর করতে, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ করতেও এই দিনটি উদযাপন করা হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক নারীদিবসে প্রত্যেক বছরের মতো এবছরও নিদিষ্ট একটি থিম নির্বাচন করা হয়েছে। এই বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের থিমটি হলো “DigitALL: innovation and technology for gender equality” অর্থাৎ প্রযুক্তি এবং ডিজিটাল মাধ্যমে নারীদের কতটা অগ্রগতি হয়েছে। এই অবজারভেশন এর ফলাফলে উঠে এসেছে ২০২২ এর রিপোর্ট থেকে। জানা গেছে ২০২৩ এ ডিজিটাল মাধ্যম ব্যাবহারকারী নারীদের সংখ্যা আগের থেকে অনেকটাই কমছে।
আরও পড়ুনঃ নারী পুরুষের মধ্যে রয়েছে কিছু অবাক করা মানসিক পার্থক্য, দেখুন সেগুলি
এছাড়াও ৫১ টি দেশের সমীক্ষায় দেখা গেছে ৩৮ শতাংশ মহিলা বিভিন্ন ভাবে অনলাইনে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এর ফলে তারা অনলাইন বা ডিজিটাল কোনো কাজে স্বছন্দ বোধ করছেন না, যে কারণে ডিজিটাল উন্নতিতে তারা পুরুষদের তুলনায় পিছিয়ে পড়ছেন এবং আরো বিভিন্ন বিষয় যেমন বিজ্ঞান, বিভিন্ন প্রযুক্তিগত কৌশল এর দিক থেকে তারা তাদের কেরিয়ারেও সাফল্য অর্জন করতে পারছেন না। ২০৫০ সালের মধ্যে প্রযুক্তিগত কৌশল সম্পর্কিত ৭৫% চাকরি কথা বলা হয়েছে এই সমীক্ষায়। অথচ ডিজিটাল এবং প্রযুক্তিগত দিক থেকে মাত্র ২২% নারী এখনও পর্যন্ত এই জায়গা দখল করতে পেরেছেন ।