Outlinebangla: একসাথে বন্ধুরা মিলে কোথাও ঘুরতে গেলেন অথবা সবাই মিলে কোথায় আড্ডা দিচ্ছেন, আপনি হটাৎই খেয়াল করলেন যে আপনার পাশে বসে বন্ধুকে ততটাও মশা কামড়াচ্ছে (Mosquito Bite) না যতটা আপনাকে কামড়াচ্ছে। শুধু এখনি না আপনি যেখানেই যান না কেন সেখানেই মশারা সবচেয়ে বেশি আপনার আশেপাশেই ঘুরঘুর করে। তাই আপনি যেখানেই যান সেখানে গিয়ে আপনার প্রথম কাজ হয় মশার থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করা। আপনিও কখনো কখনো মশার উপর ব্যতিবাস্ত হয়ে বলে ওঠেন ধুর! সব মশা (Mosquito Bite) কি আমাকেই খুঁজে পায় কামড়ানোর জন্য! আপনি সবসময় আপনার বন্ধুদের কাছে থেকে শুনে শুনে মুখস্ত করে নিয়েছেন যে আপনার রক্ত মিষ্টি তাই মশারা খুঁজে খুঁজে আপনাকেই কামরায় (Mosquito Bite)। কিন্তু সত্যিই কি তাই? নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে এর পিছনে! আপনার কি জানা রয়েছে এই প্রশ্নের উত্তরগুলো? যদি না জানা থাকে তো আজকের প্রতিবেদনটি আপনার জন্যই।
মশা কেন সবার মাঝে খুঁজে খুঁজে আপনাকেই বের করছে এই প্রশ্নের উত্তরটা আগে জেনে নিন: (Mosquito Bite)
শরীরের গন্ধঃ
মশা বিশেষ কয়েকটি যৌগের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকে বলে জানা যায়। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ল্যাকটিক অ্যাসিড, ইউরিক অ্যাসিড, আমোনিয়া, কলেস্টরল ইত্যাদি। এগুলো মানুষের ঘাম এবং ত্বকে পাওয়া যায়। এই কেমিকাল গুলো মানুষের জিনের বৈশিষ্ট্য এবং ত্বকে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়ার উপর স্থিতিশীল। মানুষদের গায়ের গন্ধের মধ্যে ল্যাকটিক আসিডের গন্ধ মশাদের সবচেয়ে পছন্দের গন্ধ। আপনি যখন ব্যায়াম, দৌড়াদৌড়ির মতো শরীরচর্চা গুলি করেন তখন আপনার শরীরে প্রচুর পরিমানে ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরী হয় যার ফলে আপনাকে মশা সহজেই খুঁজে বের করে নেয় এর থেকে বাঁচতে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন শরীরচর্চা করার পর সাবান দিয়ে ভালো করে স্নান করে নিতে।
আরও পড়ুনঃ Pumpkin: মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে কঠিন রোগের চিকিৎসা, জানুন উপকৃত হবেন…
শ্বাস প্রশ্বাসের সময়ে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডঃ
মশার শরীরে উপস্থিত থাকে ম্যাক্সিলারি পাল্প। এটি এমন একটি প্রত্যঙ্গ যেটির সাহায্যে মশা ১৬৪ ফুট পর্যন্ত দূরে থাকা কার্বন ডাই অক্সাইড কে খুব সহজেই চিনে নিতে পারে। মানুষ যখন শ্বাস ছাড়ে তখন বায়ুমন্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়। প্রচুর পরিশ্রম এবং অতিরিক্ত পরিমানে শরীরচর্চায় এই গ্যাস নির্গত হওয়ার পরিমান বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।
এতো মানুষ থাকতে মশা কেন আপনাকেই বেশি কামড়ায়
দেহে উপস্থিত তাপঃ
একটি মশা যতই আপনার কাছাকাছি আসার চেষ্টা করবে ততই আপনার দেহের তাপ অনুভব করতে পারবে। আপনার শরীরের অধিক তাপ যুক্ত জায়গাটি খুঁজে বের করতে সাহায্য করে মশার পায়ে থাকা সেন্সরের সাহায্যে। আমাদের প্রত্যেকের শরীরে একটি নিদিষ্ট পরিমানে তাপ উৎপন্ন হয়। মশা গায়ের উপর বসলেই সবচেয়ে বেশি তাপযুক্ত জায়গাটি খুঁজে বের করে নেই সহজেই।
আরও পড়ুনঃ Gastric Problems: ঘরোয়া উপায়ে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে যেভাবে মুক্তি পাবেন
শরীরের স্থূলতাঃ
জানলে আপনিও অবাক হবেন, আমাদের আধুনিক সমাজ যতই এগিয়ে যাক এখনো যেমন আমাদের সমাজে সুন্দর রূপ, লম্বা সুদেহীকে আলাদা করে গুরুত্ব দেয় মশারাও ঠিক তেমন মোটা লম্বা সুদেহী মানুষদের বেশি আকৃষ্ট করে। কারণ সুদেহী বা মোটা ব্যাক্তিদের দেহে জায়গা অনেক বেশি ফলে পরিবাহিত তাপের পরিমান,সঞ্চালিত রক্তের পরিমান সবই একটু বেশি অন্যদের তুলনায়। তাই স্থুল মানুষেরা যত বেশি বেশি করে নাক দিয়ে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়বেন মশারা ততো আকৃষ্ট হয়ে আলাদা করে আপনাদের মাথাকে বেশি টার্গেট করবে।
গর্ভাবস্থাঃ
অন্য যে কোনো নারীর তুলনায় গর্ভবতী নারীদের বেশি মশার উপদ্রব সহ্য করতে হয়।কারণটি হলো এই অবস্থায় কার্বন ডাই অক্সাইড অধিক পরিমানে নির্গত হয় পাশাপাশি এই সময়ে তাদেরকে রক্তের বিপাকিয় হার অনেক বেশি থাকে।
আরও পড়ুনঃ Kleptomania: চুরি করা যখন মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধি
পরিহিত পোশাকের রঙঃ
মশারা গাঢ় রঙ বেশি পছন্দ করে। তাই যেসব ব্যাক্তি মশার উপদ্রবে ভুগছেন তারা আজই গাঢ় রঙ ত্যাগ করুন। রক্ত চোষার ক্ষেত্রে মশারা নিজেদের শিকার খুঁজতে অতি ধুরন্ধর শিকারি। গাঢ় রঙ বলতে সাধারণত কালো, লাল, নেভি ব্লু এর কথা বলা হয়েছে।
Mosquito Bite:
উপরের সমস্ত কারণগুলোকে নিজের শরীরের উপর আলাদা আলাদা ভাবে যাচাই না করে একসাথে সবকটাকে মিলিয়ে খেয়াল করার চেষ্টা করুন। তবেই আপনি আপনার প্রশ্নের ঠিকঠাক উত্তর খুব সহজেই খুঁজে পাবেন, যে সব মানুষকে ছেড়ে মশা কেন আপনাকেই কামড়াচ্ছে। এইসময় একটা মজার ব্যাপার লক্ষ করা যায়, ব্যাপারটি হলো আমাদের মধ্যে এমন অনেক লোক আছেন যাদেরকে মশা কামড়ালেও তারা মশাকে কোনো পাত্তাই দেয় না এমনকি তাদের মশা কামড়ানো জায়গাটিতে চুলকাতেও দেখা যায় না এরফলে কোনো জায়গা ফুলতেও দেখা যায় না। এরকম মনের জোর এবং অবশ্যই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে আপনার উপরও কোনো মশা নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারবে না।