Outlinebangla: সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে বিজ্ঞান মানু্ষকে একের পর এক উপহার দিয়েই চলেছে, যা জীবনযাপনকে অনেক সহজ করে তুলেছে৷ কিন্তু বিজ্ঞানের সেই আশীর্বাদই আজ অভিশাপে পরিণত হয়েছে৷ ‘প্লাষ্টিক’ বর্জ্য তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ৷ দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের ব্যাবহার অপরিহার্য। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যত্রতত্র ব্যাবহার হচ্ছে প্লাস্টিক। তাই প্লাস্টিক বদলে কাগজের মোড়ক ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বহু দেশ। কিন্তু কাগজের ব্যবহারেও কি সমস্যার সমাধান হবে? কারণ কাগজের ব্যাবহার বাড়ালে হাজার হাজার গাছ কাটতে হবে। এই সমস্যার সমাধান করতে অভিনব সমাধান খুঁজে বের করেছেন জাপানের একটি সনস্থা। কাগজের মোড়ক ব্যবহারের পর ওই কাগজ মাটিতে রোপণ করলে জন্ম নেবে গাছ (THE ECO-FRIENDLY NEWSPAPER)। শুনে আশ্চর্য হলেও এটাই সত্যি।
এই অভিনব উদ্ভাবনীর পিছনে রয়েছেন জাপানের পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞানী মাইনিচি শিমবুনশা (Mainichi Shimbunsha)। জেনে রাখা ভালো ‘সবুজ সংবাদপত্র’ (Green Newspaper)-এর উদ্ভাবক তিনিই। মূলত পরিবেশ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে তার এই অভিনব উদ্যোগ। তিনি একটি সংবাদপত্রের সূচনা করেছিলেন, ‘দ্য মাইনিচি’-খ্যাত সেই সংবাদপত্রই ছাপা হয়েছিল একটি বিশেষ কাগজে। যে কাগজ শুধুমাত্র ১০০ শতাংশ জৈববিয়োজনযোগ্যই নয়, (THE ECO-FRIENDLY NEWSPAPER) বিভিন্ন ফুল গাছের দানা দিয়ে তৈরি। এই কাগজ পড়ার শেষে কোনো জায়গায় রোপণ করলে গাছের জন্ম দিতেও সক্ষম (THE ECO-FRIENDLY NEWSPAPER)।
সাউদার্ন ইন্ডিয়ানা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমীক্ষার রিপোর্টে জানা গিয়েছে, প্রতি আমেরিকান নাগরিকের কাগজের চাহিদা মেটাতে প্রতিবছর গড়ে ৭টি গাছ কাটা হয়। অর্থাৎ, শুধু আমেরিকাতেই কাগজ তৈরির জন্য বছরে ২০০ কোটি গাছ কাটা পরে। একবার ভেবে দেখুন গোটা বিশ্বের সংখ্যাটা। জাপানের পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞানীদের দাবি, গ্রিন কাগজের ব্যবহার বদলে দিতে পারে এই কঠিন পরিস্থিতি। আমরা অনেকেই কাগজ কে পরিবেশ বান্ধব হিসাবে ধরে নিই। তবে খবরের কাগজ বা বই-এর ছাপা পৃষ্ঠা আদতে তেমনটা নয়। কারণ ছাপার কালিতেই মিশে থাকে সীসা-সহ একাধিক ক্ষতিকর ধাতু। যা মৃত্তিকা দূষণের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এক্ষেত্রেও তিনি জৈব কালি তৈরি করে ফেলেছেন। যা ফলে মৃত্তিকা দূষণের ক্ষত কমবে।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এই সংবাদপত্রটি (THE ECO-FRIENDLY NEWSPAPER) বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। বিশ্বজুড়ে তার বিক্রি প্রায় ৪৬ লক্ষ। এর থেকে আয় বছরে ৮ কোটি ইয়েন। তবে আয়ের সংখ্যাটা কম হলেও, পরিবেশের ক্ষত সরানোর উদ্যোগে খুব খুশি জাপানের পরিবেশবিদ ও বিজ্ঞানী মাইনিচি শিমবুনশা (Mainichi Shimbunsha)।
আরও পড়ুনঃ The beauty of orchids: অর্কিডের সৌম্য ছোঁয়ায় হারিয়ে যাক জীবনের সব বিবর্ণতা