Outlinebangla Digital Desk: সম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খবর থেকে শুরু করে স্বামীর সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদ সবকিছু নিয়ে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু সাংসদ-অভিনেত্রী নুসরত জাহান। বিতর্ক যেন তাঁর পিছু ছাড়ছে না। এই পরিস্থিতিতে অভিনেত্রীর নাম না করেই তাঁর পাশে দাঁড়ালেন বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন। বহুগামিতা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন লেখিকা। তবে লেখিকার দাবি, এই পোষ্টের বিষয় কোনও ব্যক্তি নয়, বরং বিষয় হল পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীর বহুগামিতা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় খুবই সক্রিয় তসলিমা নাসরিন। নারীবাদী লেখিকা নারীকেন্দ্রিক ঘটনাগুলি নিয়ে লেখার জন্য অনেকবার তাঁকে বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে। এবার তিনি মূলত বহুগামিতা নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। তাঁর মতে বহুগামিতার ক্ষেত্রে সমাজে নারী ও পুরুষকে আলাদাভাবে দেখা হয়। তিনি লিখেছেন, ”কোনও পুরুষ বহুগামী, এমন খবর শুনলে এমন ছিঃ ছিঃ রব শোনা যায় না তো!” এই প্রসঙ্গে তিনি উত্তম কুমার, গৌরী দেবী এবং সুপ্রিয়া দেবীর সম্পর্কে তুলে বলেছেন,”শিল্প সাহিত্য নাটক সিনেমার জগতে যে পুরুষ বহুগামী নয়, এমন কয়েকজনের নাম বলো। অথবা যে কজন বহুগামী, তাদেরই নাম বলো। কী বলতে চাইছো? বলতে চাইছি, যে পুরুষেরা বহুগামী, তাদের বিরুদ্ধে তুমি কি সরব? নিশ্চয়ই। তুমি তো উত্তম কুমার বলতে অজ্ঞান। উনি তো গৌরী দেবী এবং সুপ্রিয়া দেবী – দুজনের সঙ্গে থাকতেন। একসময় গৌরী দেবীকে ছেড়ে সুপ্রিয়া দেবীকে বিয়ে না করেই স্বামী স্ত্রীর মতোই থাকা শুরু করলেন। তুমি তো উত্তম কুমারকে গালি দাও না।”
এর পাশাপাশি তিনি সমরেশ বসুর প্রসঙ্গ তুলে লিখেছেন, “তুমি তো সমরেশ বসুরও নিন্দে করো না, উনি তো দু’বোনকে বিয়ে করেছিলেন। প্রখ্যাত বহুগামী রবিশংকরকে নিয়েও তো কিছু বলো না! একজনকে ছেড়ে আরেকজনকে নিয়ে থেকেছেন, একে তো বহুগামিতা বলে না। তাহলে যে মেয়েটির নিন্দে করছো, সেও তো একজনকে ছেড়ে আরেকজনকে নিয়ে থেকেছে। যা করেছে প্রকাশ্যে, লুকিয়ে নয়, কাউকে ঠকিয়ে নয়। তাহলে তার নিন্দে করছো কেন।” তিনি আরও লেখেন, ”সমরেশ বসু বা উত্তর কুমার বা রবিশংকর অনেক বড়, এত বড়’র সঙ্গে কোথাকার কে, তার তুলনা চলে না। বড় হলে বুঝি অনৈতিক কাজ করা যায়? আর কোথাকার কে’দের জন্যই নীতি? নাকি শুধু মেয়েদের বেলায় নীতির প্রশ্ন ওঠে? বাজে কথা হচ্ছে। আমি নারী -পুরুষকে আলাদা করে দেখি না। তাহলে শুধু মেয়েদের পতিতালয় কেন, পুরুষদের পতিতলয় কেন নেই- এই প্রশ্ন কোনওদিন করেছো? বাই দ্যা ওয়ে, পতিতালয়কে যে আইনত বৈধ করা হয়েছে , তার বিরুদ্ধে কিছু বলো না কেন?”
লেখিকার মতে, একজন পুরুষের যা অধিকার, একজন নারীরও সেই সমান অধিকার থাকবে। তাঁর কথায়, ”নারীর হরমোন যতই টগবগ করুক, তাদের একগামী হতেই হবে। বেচারা পুরুষ! পুরুষের বহুগামিতাকে জাস্টিফাই করার জন্য ধর্ম থেকে শুরু করে হরমোনের আশ্রয় পর্যন্ত নিতে হচ্ছে!”