Outlinebangla: বর্তমান সময়ের প্রতিদিনকার আস্বাস্থ্যকর খাদ্যভাস ও ব্যস্ততা আমাদের শরীরে ও মনে খারাপ প্রভাব ফেলে। ঠিক এই জন্যই উদ্বেগ, মানসিক চাপ আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিক ভাবে জরিত হয়ে পড়েছে। এটি আমাদের যৌনজীবনেও প্রভাব বিস্তার করে থাকে (Primary or secondary infertility)। এই সব বিভিন্ন কারনে নারী এবং পুরুষের মধ্যে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে বন্ধ্যাত্ব। অলিতে গলিতে খুলছে infertility ক্লিনিক।
বন্ধ্যাত্ব কাকে বলে (What is infertility):
যে কোনো দম্পতি জন্মবিরতি করণ পদ্ধতি ছাড়া অর্থাৎ একবছর ধরে একসঙ্গে বসবাস করার পরেও যদি সন্তান ধারণে অক্ষম হন তখন এই সমস্যাটিকে বন্ধ্যাত্ব বলা হয়।
প্রকারভেদ (Primary or secondary infertility):
বন্ধ্যাত্ব সাধারণত দুই প্রকার। একটি প্রাইমারি (Primary infertility), যাদের কোনোদিন সন্তান হয়নি ও অপরটি সেকেন্ডারি (Secondary infertility) যাদের আগে কখনো গর্ভধারন হয়েছে কিন্তু বর্তমানে আর হচ্ছে না। সমীক্ষা অনুযায়ী ৪০%পুরুষ ও ৪০% নারীর বন্ধ্যাত্বের সমস্যা থাকে। বাকি মাত্র ২০% স্বামী স্ত্রী উভয়েরই সমস্যা দেখা যায়।
পুরুষ বন্ধ্যাত্বের কারণ (Male infertility):
ত্রুটিযুক্তি শুক্রাণু বা অচল শুক্রাণুর অধিক উপস্থিত। অনেকসময় পুরুষদের প্রধান হরমোন (যেমন টেস্টষ্টেরন) সঠিক মানে থাকে না এর ফলে সে এগ ফার্টিলাইজ করতে অক্ষম হয়।
বিশেষত বীর্যসংক্রান্ত দুটি সমস্যা প্রথমটি এজোস্পার্মিয়া এবং দ্বিতীয়টি ওলিগোস্পার্মিয়া। প্রথমটিতে বীর্যের মধ্যে শুক্রাণু থাকেই না ও দ্বিতীয়টিতে শুক্রাণুর পরিমান হ্রাস পায়। প্রজনন অঙ্গে যক্ষা, অস্ত্রপ্রচারের কারণে সৃষ্ট কোনো বাধা, যৌনবাহিত নানান অসুখ। ছোটবেলায় মাম্পস বা মিজেলসের প্রভাব, ধুমপান, ডায়বেটিস পুরুষ বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে।
নারী বন্ধ্যাত্বের কারণ (Female infertility):
নারীদের হরমোন ঘটিত যেকোনো কারণে সন্তান ধারণে বাধা আসতে পারে। যেমন প্রোল্যাকটিন হরমোনের সমস্যা, থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা ইত্যাদি। বিশেষত কয়েকটি যৌনবাহিত রোগের কারণে মহিলাদের প্রজনন অঙ্গগুলির ক্ষতি হয়ে থাকে।এই কারণটি মহিলাদের বন্ধ্যাত্বের অন্যতম একটি দিক।
বর্তমান যুগের প্রায় বেশিরভাগ নারীরাই পিসিও বা পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যায় ভোগেন। সাধারণত মহিলাদের প্রত্যেক মাসে ওভারি থেকে ডিম্বাণু নিঃসৃত হয় কিন্তু এই সমস্যাটি থাকলে ওভারি থেকে ডিম্বাণু নিঃসৃত হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করে থাকে।
এছাড়াও ক্যান্সার,খাদ্যভাস,মানসিক চাপ,বয়স, পরিবেশগত প্রভাবের মতো নানান কারণে ডিম্বাণুর সংখ্যা কমে যাওয়ার সম্ভাবনা অধিক। বিশেষ কিছু জন্মগত ত্রুটি সন্তান আসতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যেমন অপরিপক্ক জরায়ু, ছোট ডিম্বাশয়, জন্মগত ভাবে ডিম্বাণু কম থাকা ইত্যাদি।
আরও পড়ুন:
১.Sexually transmitted diseases, STD: সতর্ক থাকতে আগে ভাগে জানুন এই ৮ টি যৌন রোগ সমন্ধে
২.Hair loss or Thinning hair: যেভাবে আমরা চুলের যত্ন নেবো?
৩.Applications of artificial intelligence and robot: ভবিষ্যৎ কোন দিকে, জানুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্বন্ধে
প্রতিরোধের উপায় (Infertility prevention):
স্বামী স্ত্রী উভয়কেই বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হবে (fertility test) । এই বিষয়টি নিয়ে কোনো সংকোচবোধ করলে চলবে না।
মহিলা পুরুষ উভয়কেই কয়েকটি দিকে নজর দিতে হবে। যেমন শর্করা যুক্ত খাবার এড়িয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার দাবারের দিকে অধিক নজর দিতে হবে। ফাস্টফুডকে সরিয়ে রেখে ফলমুল শাকসবজি বেশি বেশি করে খেতে হবে। এককথায় দৈনিক খাদ্যভাসের পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
স্থূলতা সন্তান ধারনের ক্ষেত্রে এক মস্ত বড়ো বাধা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিজেদের দৈনন্দিন জীবনে কয়েকটি পরিবর্তনের দিকে নজর দিতে হবে।রাত্রে তাড়াতাড়ি ঘুমোনোর এবং খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে।