বাবা দিনমজুর, ছিলনা গৃহশিক্ষক, ১৬ ঘণ্টা পড়তে হয়নি, প্রাপ্ত নম্বর ৬২২

নিজস্ব প্রতিবেদনঃ বীরভূমঃ সদাইপুর থানার অন্তর্গত লক্ষনডিহি গ্রামে একটি খড়ের চালার ছোট্টো মাটির ঘর,সেই ঘরেই তাদের বসবাস। বাবা সেখ সামসুল পেশায় দিনমজুর চাষের সময় লোকের জমিতে ভাগে চাষ করে ধান উৎপন্ন করেন। মা লাইলা বেগম পাশের ঘরে কাজ করে এসে ঘরের রান্নাবান্না সামলান। বাবা দিনমজুর ও মা পরের ঘরে কাজ করে কোনোরকম তাদের সংসার চলছে। কিন্তু এরপর কি হবে সেই ভেবে দিশা পাচ্ছে না পরিবার। তাই মেধাবী ছাত্র সেখ আরজুলের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

 

গত ১৫ ই জুলাই দীর্ঘ কোভিড ভাইরাস কে উপেক্ষা করে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হয়। চিনপাই হাইস্কুল থেকে পরিক্ষা দিয়ে সেখ আরজুল ৬২২ নম্বর পেয়েছে। তার বিষয়ভিত্তীক নম্বর হল বাংলা ৮৩, ইংরেজি ৯০,গণিত ৮৬,ভৌতবিজ্ঞান ৯৫,জীবনবিজ্ঞান ৯২,ইতিহাস ৯০,ভূগোল ৮৬। কখনও কখনও দিনমজুরের কাজ করে আবার কখনও বাবাকে চাষের কাজে সাহায্য করা, এই সমস্ত কিছু কাজ করে যতটুকু সময় বাঁচে সেই সময় কে কাজে লাগিয়ে ঋতিমতো পড়াশোনা করে গেছে। আর্থিক সমস্যা, কষ্ট ও দারিদ্র্য কে জয়লাভ করে মাধ্যমিকে সমস্ত বিভাগে লেটার নিয়ে পাশ করেছে সে।

 

পরিবারের কথা মাথায় রেখে বাবার কাজে সাহায্য করলেও পরিস্থিতির সঙে সমঝোতা করে নিতে হয় সেখ আরজুল কে। সব বিষয়ে টিউশন পড়ার মতো সামর্থ্যও ছিল না তার।

সেখ আরজুল বলেন, “আমার অন্যান্য বন্ধুদের মতো গৃহশিক্ষক রেখে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারিনি তাই আমি স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষিকাদের পড়া মন দিয়ে শুনতাম এবং বাড়ি ফিরে অনেক রাত পর্যন্ত মশারির মধ্যে মধ্যে পড়াশোনা করতাম তারপর নিজের মতো করে খাতায় লিখতাম। স্বপ্নেও ভাবিনি জীবনে প্রথম বড়ো পরিক্ষায় এত ভালো ফল হবে। তবে স্কুলের শিক্ষকরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিলে এই ফল হতো না। মাধ্যমিক পর্যন্ত অনেক কষ্ট করেই পড়েছি ,এরপরের পথ কি করে পার হব জানি না। যত কষ্টই হোক আমি পড়াশোনা চালানোর চেস্টা করে যাবো। আমি সায়িন্স নিয়ে পড়াশোনা করে ম্যাকানিকাল ইঞ্চিনিয়ার হতে চায়।”

সম্পর্কিত পোস্টগুলি

আমাদের ফলো করুন

3,920FansLike
47SubscribersSubscribe

না পড়লেই মিস