Outlinebangla: নারীর গর্ভধারণের সময় মানসিক ও শারীরিক দিকে কিছু পরিবর্তন আসে। এই সময় খাদ্যাভ্যাস ও পরিপাকতন্ত্রের কাজেও কিছু পরিবর্তন ঘটে। গর্ভধারণের সময় বমি বমি ভাব, গলা-বুক জ্বালা এবং মাথার ব্যাথা ইত্যাদি রোগের দেখা দেয়। আবার খাদ্যাভ্যাসের ব্যপক পরিবর্তন ঘটে। এই সময় টক, মিষ্টি, ঝাল বা নোনতা খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা বা আকর্ষণ জন্মায়। তবে কিছু কিছু নারী গর্ভধারণের পর অদ্ভুত অদ্ভুত খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হয়। যা “পিকা” নামে পরিচিত।
পিকা কি?
পিকা মূলত একধরনের ইটিং ডিজঅর্ডার। বলা চলে পিকা আক্রান্তরা এমন ধরনের খাদ্যের দিকে ঝোঁকে যেগুলো সাধারণত খাদ্য হিসাবে গণ্য নয় এবং এতে কোনরকম পুষ্টি গুণও নেই। যে সব খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হয়। যেমন- মাটি, বরফ, সাবান, মাজন, কাগজ, চক, শ্যাম্পু, আঠা ইত্যাদি।
কীভাবে হলো এই নামকরনঃ
পিকা শব্দটি ল্যাটিন শব্দ। যা pica-pica থেকে উদ্ভব হয়েছে। pica-pica হল ম্যাগপাই প্রজাতির একধনের পাখির ল্যাটিন নাম। এই পাখি চোখের সামনে যা পায় তাই খায়। ম্যাগপাই প্রজাতির পাখির এই খাদ্যাভাসের সঙ্গে পিকা রোগীর মিল থাকায় রোগের নাম পাখির নাম অনুসারে রাখা হয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে প্রতি ১০ জন গর্ভবতী নারীর মধ্যে ১ জন পিকা রোগে আক্রান্ত হয়। গর্ভাবস্থায় এই রোগ মানেই পুষ্টির অভাব। গর্ভধারণের অনুমানিক ৫ সপ্তাহের মধ্যে এই রোগের লক্ষন দেখা দিতে পারে। তবে যত দিন যায় অনেকটাই কমে যায় এই রোগের প্রভাব। সাধারণত যেসব নারীদের শরীরে প্রয়োজনীয় খনিজের ঘাটতি রয়েছে, তাদের পিকা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে গর্ভাবস্থায় পিকা যদি নিয়ন্ত্রণে না আনা যায় তাহলে গর্ভস্থ শিশুর ক্ষতি হতে পারে।
আরও পড়ুনঃ Kleptomania: চুরি করা যখন মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাধি
পিকার উপসর্গ কি কি?
পিকা রোগের নির্দিষ্ট কোনো উপসর্গ নেই। অপুষ্টিকর খাবার খাওয়ার ফলে ব্যাকটেরিয়া প্রভাবে নানা উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন- পেটে ব্যাথা, বমি বমি ভাব, ডায়রিয়া, পেটে আলসার, অবসাদ, অন্ত্রে প্রতিবন্ধকতা।
পিকা রোগে আক্রান্ত ব্যাক্তি কিধরণের খাবার খাচ্ছে তার ধরন দেখে পিকার বিভিন্ন নাম করন করা হয়ঃ
বরফ খাওয়া (প্যাগোফেজিয়া)
কাদা, মাটি খাওয়া (জিওফেজিয়া)
চুল (ট্রাইকোফেজিয়া)
মাজন খাওয়া (অ্যামাইলোফেজিয়া)
কাঠ খাওয়া (জাইলোফেজিয়া)
দেশলাইয়ের কাঠির পোড়ানো অংশ (কটোপাইরিওফেজিয়া)
আরও পড়ুনঃ Benefits of Methi: রূপচর্চায় মেথির ম্যাজিক
গর্ভাবস্থায় এই লক্ষন প্রকাশ পেলে যা করবেনঃ
আচার বা চাটনি খেতে পারেন, এলাচের দানাও খেতে পারেন।
ফলের রসের আইস কিউব করে খেতে পারেন।
খাদ্যতালিকায় আয়রন, ক্যালসিয়াম, জিংক ও ম্যাগনেসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে।
প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাদ্যতালিকা গঠন করতে হবে।
বিঃদ্র-পিকার লক্ষন দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এই প্রতিবেদনটি মিডিয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী তৈরি করা।