নিজস্ব প্রতিবেদনঃ বীরভূমঃ ইউনিসেফ এর মতে ১৮ বছর বয়স না হলে প্রথাসিদ্ধ অথবা প্রথাবহির্ভূত যে কোন বিয়ে বাল্য বিবাহ বলে গণ্য হবে। যেহেতু ১৮ বছর বয়সের আগে ছেলে মেয়েরা সিদ্ধান্ত নিতে অপারগ থাকে তাই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাড়ির লোকেরাই বাল্য বিবাহের সিদ্ধান্তটি নিয়ে থাকেন। অনেক ক্ষেত্রে বাল্যবিবাহ দুর্বল আর্থ-সামাজিক অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত হলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা অজ্ঞতা এবং সচেতনতার অভাব। আমাদের দেশে “দ্য প্রোহিবিশন অফ চাইল্ড ম্যারেজ অ্যাক্ট অফ ২০০৬”( The Prohibition of Child Marriage Act of 2006) অনুজায়ি ছেলের বয়স ২১ বছর এবং মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হলে তা আইন সম্মত নয়।
বাল্য বিবাহ রোধে প্রশাসন থেকে শুরু করে অন্যান্য বিভিন্ন সংস্থা কাজ করে চলেছে, তার মধ্যে চাইল্ড লাইনের তৎপরতা বিশেষ উল্লেখযোগ্য। নিয়ম অনুযায়ী ১০৯৮ (1098) নম্বরে ফোন করার ২ ঘণ্টার মধ্যেই স্থানীয় প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকে। এবারে চাইল্ড লাইনের তৎপরতায় বীরভূমে এক নাবালিকার বিয়ে রুখল প্রশাসন। ঘটনাটি বীরভূমের নলহাটী থানার। দশম শ্রেণীর ছাত্রীর বয়স ১৬ বছর। মুর্শিদাবাদ জেলার এক যুবকের সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছিলো তার, শুরু হয়েছিলো বিয়ের অনুষ্ঠান। গোপন সুত্রে খবর পেয়ে বীরভূম চাইল্ড লাইনের সদস্যরা নলহাটি থানার পুলিশ ও সমাজসেবী তথা শিক্ষিকা বর্ণালী রুজকে নিয়ে পৌঁছে যান সেই নাবালিকার বাড়িতে। বিয়ের অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন তারা। প্রাপ্ত বয়স্ক না হলে বিয়ে দেওয়া যাবে না বলে একটি লিখিত বয়ান নেওয়া হয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে, তাতে সই করেন নাবালিকার বাবা।
আরও পড়ুন- বিশ্বে সর্বাধিক করোনা আক্রান্ত দেশের তালিকায় তিন নম্বরে ভারত
বাল্য বিবাহ যে শুধু শারীরিক এবং মানসিক ভাবে ক্ষতিকর তাই নয়, এতে বহু সম্ভবনাময় ছেলে মেয়ের ভবিষ্যৎ বিপর্যয়ের মুখে পরে, তারা সব রকম সরকারী সুযোগ সুবিধে থেকে বঞ্চিত হয়। তাই এই বিবাহ বন্ধ করে নাবালিকাকে সুস্থ স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেওয়ায় জন্য এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাধারন মানুষ। উপযুক্ত সময়ে বিবাহ দেওয়া উচিত এই বিষয়ে আমাদের দেশে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে। ভাল মন্দ বিভিন্ন দিক সম্পর্কে মানুষকে ওয়াকিবহাল করতে হবে, যা আমাদের সামাজিক দায়িত্ব।