Outlinabangla: ছোট থেকে বড়, মধ্যবিত্ত বা উচ্চবিত্ত যে কোন শ্রেণীর মানুষের পছন্দের খাবার বিস্কুট। বিস্কুট পছন্দ করেন না এমন খুব কম মানুষই আছেন মনে হয় (History of cookies and biscuit)। রাস্তা ঘাটে ঝটপট ১ প্যাকেট বিস্কুট কিনে খেয়ে পেট ভরান অনেকেই। আবার চায়ের সাথে বিস্কুট খাওয়া অনেকের অভ্যেস। তবে আপনি কি জানেন কোথা থেকে এলো এই কুকিজ বা বিস্কুট? চলুন জেনে নিই কুকিজ বা বিস্কুটের ইতিহাস।
আমরা অনেকেই আছি যারা কুকিজ বলে থাকি আবার অনেকেই বিস্কুট দুটি খাবার কি আসলেই এক? নাকি আলাদা! বিস্কুট আর কুকিজের মধ্যে রয়েছে উল্লেখযোগ্য কিছু পার্থক্য (History of cookies and biscuit) । আগে সেটা জেনে নিন তারপর বরং জানবো এদের ইতিহাসের কথা।
কুকিস নাকি বিস্কুট (Biscuits vs Cookies):
বিস্কুট নামটির উৎপত্তি হয়েছে ল্যাটিন শব্দ ‘Biscoctum’ থেকে যার অর্থ দুই দফাই বেক করা। অপরদিকে কুকিজ নামটির উৎপত্তি ডাচ শব্দ ‘Koekje’ থেকে যেটার মানে হলো ছোট কেক। বিস্কুট মচমচে, অল্প শক্ত ধরনের হয়ে থাকে অপরদিকে কুকিজ হয় নরম যাতে চিবোতে সুবিধা হয়। তাই একই জিনিস মনে হলেও এই সামান্য পরিবর্তন এদের একে অপরটির থেকে আলাদা করেছে।
আরও পড়ুন- Make rasgolla with semolina: সুজি দিয়েই তৈরি করে ফেলুন রসগোল্লা
কুকিস এর ইতিহাস (History of cookies and biscuit):
বিভিন্ন রন্ধন ঐতিহাসিকদের মত অনুযায়ী,কুকিজ এসেছে কেক তৈরি করার সময়। যে সময়ে ওভেনে কেক তৈরি করা হতো, তখন কেক তৈরির জন্য যে ব্যাটার বা গোলা থাকতো তা প্রথমে সামান্য পরিমাণে দিয়ে চেক করা হতো যে ওভেনের তাপমাত্রা ঠিক আছে কিনা সেটা দেখার জন্য এটাকেই কুকিজের প্রথম সূচনা বলে ধরা হয়ে থাকে।
অনেকে বলেন কুকিজের মূলে রয়েছে রোমানরা তবে প্রথম চিনি যোগে কুকিজের কথা শোনা যায় ইরানে। ইরানের মানুষেরা খাবারকে মিষ্টি করতে প্রথম দিকে মধুর ব্যবহার করত, পরে যখন চিনির উৎপাদন শুরু হলো তখন সেখানকার অভিজাত সম্প্রদায়ের মানুষেরা চিনি দেওয়া কুকিজ খাওয়া শুরু করে।
ভারতীয় উপমহাদেশে মশলার সুখ্যাতির জন্য অনেকেই এই দেশে এসেছেন, তবে গোটা পৃথিবী তখন মিষ্টির জন্য মধুর ওপর নির্ভরশীল ছিল। কারোর মাথায় আসেনি যে ভারতীয় আখ গাছ থেকে চিনি হতে পারে। আলেকজান্ডার (Alexander the great) আমাদের দেশ এসেছিলেন, তখন তিনি প্রথম লক্ষ্য করেছিলেন মৌমাছি ছাড়া এই আখ গাছ থেকে মধু উৎপাদন হচ্ছে এই দেশে,তখন তিনি ইরান পর্যন্ত এই আখ গাছ কে বিস্তৃত করেন। এর পর ইরানে চিনির উৎপাদন শুরু হয় এবং সেখানকার মানুষ প্রথম চিনি যুক্ত সুস্বাদু কুকিজ খেতে শুরু করেন।
আরও পড়ুন- Alexander the great: মহান দিগ্বিজয়ীর আড়ালে এক অজ্ঞাত দার্শনিক
পরিচিত সুস্বাদু কুকিজ গুলি:
কয়েকটি অতি পরিছিত সুস্বাদু কুকিজ হল চকলেট-চিপ–কুকিজ, মসলাযুক্ত মজাদার স্পাইসি কুকিজ, সুস্বাদু বাটার কুকিজ।
চকোলেট চিপ কুকিজ (Chocolate Chip Cookies):
নানা রকম কুকিজের মধ্যে অন্যতম চকলেট চিপ কুকিজ। চকলেট তো সবাই পছন্দ করে আর তার সাথে যদি থাকে কুকিজ তাহলে তো কোন কথাই নেই! চকলেট চিপ বিস্কুট বাচ্চাদের পছন্দের একটি কুকিজ। টল হাউস নামক রেস্টুরেন্টের মালিক ছিলেন ম্যাসচুয়েটস Ruth Gravels নামের একজন ব্যক্তি। তিনিই প্রথম ১৯৩৭ সালে কুকিজ এর সাথে চকলেট চিপস মিশিয়ে তৈরি করে চকলেট চিপ কুকিজ । তিন বছর পর ১৯৩৯ সালে সারা দেশ জুড়ে এই বিস্কুটের নাম ছড়িয়ে পড়ে। এই বিস্কুটে দানাদার চিনি,প্লেন চকলেট বা ডার্ক চকলেট কে চৌকো করে কেটে কুকিজের এর সাথে মেশানো থাকে।
মজাদার স্পাইসি কুকিজ (Spicy Cookies):
ডিমের কুসুম, লবঙ্গ, জয়িত্রী সহযোগে তৈরি স্পাইসি কুকিজ সাধারণত বাচ্চারা নয় বরং একটু বয়সে বড় মানুষরাই বেশি পছন্দ করেন। ১৯৯৬ সালে ‘Goode House Jewel’ নামক একটি বই যেটির লেখক হলেন থমাস ডসান, এই বইটিতে মশলাদার বা স্পাইসি কুকিজের রেসিপি পাওয়া গিয়েছিল। সাধারনত এই কুকিজ টিতে সবশেষে মাখন যোগ করা হয়ে থাকে এবং তারপর বেলে ছুরি দিয়ে সেপ করে কেটে বেক করা হয় পার্চমেন্ট পেপারে। আমেরিকায় এই কুকিজ এর প্রচলন রয়েছে।
আরও পড়ুন- Know the exciting facts about egg roll: জানেন কি সুস্বাদু এগ রোলের জন্ম রহস্য?
সুস্বাদু বাটার কুকিজ (Butter Cookies):
এটি ছোট থেকে বড় সবাই পছন্দ করে, বিশেষ করে ভ্রমণপ্রেমী মানুষ যারা তারা অবশ্যই ভ্রমণের সময় এট ধরনের কুকিস সাথে রাখতে পছন্দ করেন। বর্তমানে আমরা যে কুকিজ খায় সেটি ব্রিটিশদের টি – কেক এবং স্কটিশদের শর্টব্রেড কুকিজেরই বংশধর। তাই আমরা এই কুকিজকে ‘শর্টব্রেড কুকিজও’ বলতে পারি। এই কুকিজ তৈরি করতে ময়দা, চিনি,মাখন লাগে এবং শেষে কুকিজের সুগন্ধ বজায় রাখতে গোলাপজল ব্যবহার করা হয়ে থাকে।