Importance of mental health during pregnancy: গর্ভবস্থায় মানসিক চাপ আপনার ঝুঁকির কারণ

Outlinebangla: প্রত্যেকটি নারীর জীবনে গর্ভধারণ বা Pregnancy খুব স্বাভাবিক একটি বিষয় হলেও এই সময়টিতে শরীরও মনে আসে নানান ধরণের পরিবর্তন (mental health during pregnancy) । এই বিশেষ সময়টিতে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীর এই পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে কর্মস্থলের ,পরিবারের পাশাপাশি সমাজেরও সংবেদনশীল এবং সচেতন হওয়া বাঞ্ছনীয়।

গর্ভবতী অবস্থায় একজন নারীকে এক অজানা ভয় এবং অনাগত আশংকা প্রতিনিয়ত তাড়া করে বেড়ায়। এই ধরণের মানসিক চাপ সন্তান এবং মা দুজনের জন্যই ক্ষতিকর । তাই দ্রুত এই মানসিক চাপ (mental health) দূর করা প্রয়োজন।

মনে যে ধরনের প্রভাব পড়ে (Mental health during pregnancy):

যত রকমের শারীরিক পরিবর্তন রয়েছে তা অন্তঃসত্ত্বা নারীটির মনের ওপর প্রবল চাপের সৃষ্টি করে। এই সময় অনিশ্চয়তা,উদ্বেগ মন খারাপ, ঘনঘন মেজাজ বদল, রাগ এরকম বহু কিছুর লড়াই চলে গর্ভবতি নারীর মনে।
অনেকজন আবার নিজেদের আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে খুব অল্পতেই রেগে যান, বিরক্ত হন, কেঁদে ফেলেন এককথায় তাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে প্রায় সময়।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, হবু মায়েদের মধ্যে আবেগের এই ধরণের বড়ো পরিবর্তন হয় কারণ তখন কোনোকিছুই তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে না। একদিন শরীর ভাল তো পরদিন আবার দেখা যায় যে শরীর খারাপ। শারীরিক অবস্থার এই ধরণের ওঠানামা (Women Health) তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। মন থেকে চাইলেও সে অনেক কিছু করতে পারে না। যা একটা বন্দিত্বের অনুভূতি তৈরি করে।

সন্তান কেবলমাত্র একজনের মায়ের একার নয়। সন্তান দুই জনেরই তাই মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য অবনতি ঘটলে, সে যদি নিজের ঠিক মতো যত্ন না নেয় তখন তার অনাগত সন্তানের ক্ষতি হবে। স্বামীদের বুঝতে হবে স্ত্রীর সুস্থতাই বাচ্চার সুস্থতা নিশ্চিত করবে, ফলে এমন কিছু কখনোই তাদের করা উচিত নয় যাতে গর্ভবতী নারী মানসিক চাপে ভোগেন।
আরও পড়ুন- Pregnancy Tips: মা হওয়া কি মুখের কথা? প্রেগনেন্সির সময় যে দিকে নজর দেবেন

mental-health-during-pregnancy
mental health during pregnancy, Image Source: Google

গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ যে যে ঝুঁকির কারণ হতে পারে (Mental pressure during pregnancy):

মিসক্যারেজ (Miscarriage):

এটির অপর নাম স্বতঃস্ফূর্ত গর্ভপাত। এটি মানসিক ও শাররিক উভয়ভাবেই বেদনাদায়ক। গবেষণায় জানা যায়, যেসব নারীরা জীবনে কোনও বিশেষ নেতিবাচক ঘটনা বা মানসিক চাপের সংস্পর্শে এসেছেন তাঁদের প্রাথমিক গর্ভপাতের সম্ভাবনা দ্বিগুণ বেশি রয়েছে। গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মধ্যে বিষন্নতা সৃষ্টি করতে পারে। এই বিষয়টি রুখতে, অনেকেই তামাক, মাদক এবং অ্যালকোহলের মতো ক্ষতিকারক পদার্থ ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু এগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভপাত-সহ নির্দিষ্ট গর্ভাবস্থার জটিলতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

অকাল প্রসব (Premature birth):

গবেষণা বলছে , গর্ভবতীদের অতিরিক্ত মানসিক চাপ থাকলে তাঁদের তাড়াতাড়ি প্রসবের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। স্ট্রেস একটি প্রি ম্যাচিওর শিশু (গর্ভাবস্থার 37 সপ্তাহের আগে জন্ম নেওয়া) অথবা কম ওজনের শিশু (জন্মের সময় যার 2.5 কেজি বা 2500 গ্রামের কম) হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তুলতে পারে । দীর্ঘস্থায়ী চাপগুলি দেহের হরমোনের মাত্রা ভাস্কুলার সিস্টেম, এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতাতেও দীর্ঘমেয়াদী পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম।
আরও পড়ুন- Breast cancer symptoms bangla: ব্রেস্ট ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণগুলি

প্রিক্ল্যাম্পসিয়া (Preeclampsia):

গবেষণা দেখা গেছে,আপনি যদি ইতিমধ্যেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তবে আপনার ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় প্রিক্ল্যাম্পসিয়া হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। প্রিক্ল্যাম্পসিয়া একটি বিপজ্জনক গর্ভাবস্থার জটিলতা। এটি একজন মহিলা যাঁর রক্তচাপ সাধারণত স্বাভাবিক তাঁর ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার 20 সপ্তাহ পরে শুরু হয়ে থাকে। যেটি মা এবং শিশু উভয়ের ক্ষেত্রেই জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।

mental health during pregnancy bangla
Mental health during pregnancy bangla, Image Source: Google

মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে যা যা করবেন (Avoid mental stress in pregnancy):

১। এইসময় মনকে যতটা সম্ভব শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। এই সমস্ত ক্ষেত্রে প্রসব পূর্ব ধ্যান ও যোগ্যব্যায়াম খুবই উপকারী।
২। পূর্বপরিকল্পনা করুন এবং ডাক্তারের কোনো এপয়েন্টমেন্ট কোনো অবস্থাতেই মিস করবেন না।
৩। বিশ্রাম নিন,পরিমান মতো ঘুমোন,স্বাস্থ্যকর খাবার দাবার খাবার চেষ্টা করুন।
৪। পড়াশোনা করতে পারেন গর্ভাবস্থার সম্পর্কে। এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন আপনার কখন কি করণীয় যেমন সন্তান আগমনের সময় কি করা উচিত বা অনুচিত, সন্তানের অবস্থান কিরকম হওয়া দরকার ইত্যাদি।
আরও পড়ুন-Names affect children’s future: নবজাতকের সুন্দর ও অর্থপূর্ণ নাম রাখার প্রয়োজনীয়তা

মাথায় রাখবেন এই সময় আপনি যা যা অনুভব করছেন তা অস্থায়ী । সেগুলো যতটা সম্ভব মোকাবিলা করার চেষ্টা করুন দরকার পড়লে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে ভুলবেন না।

সম্পর্কিত পোস্টগুলি

আমাদের ফলো করুন

3,919FansLike
42SubscribersSubscribe

না পড়লেই মিস