Outlinebangla Digital Desk: দোল পূর্ণিমা বা দোল যাত্রা, বাঙালির বসন্ত উৎসব। এ দিন ছোট থেকে শুরু করে বড় প্রত্যেকেই রঙের উৎসবে মেতে ওঠে। এ দিন একে অপরকে রাঙিয়ে দেওয়ার দিন। প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের পূ্র্ণিমা তিথিতে দোলযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচিত কত গান দোল উৎসবকে আরও সমৃদ্ধশালী করেছে। আমরা হয়তো অনেকেই জানি না দোল বা হোলির অর্থ এক হলেও দুটি অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ ভিন্ন। দোল উৎসব ও হোলি এক দিনে পড়ে না। দোল উৎসব বা বসন্তোত্সব বাঙালিদের রঙের খেলায় মেতে ওঠার উত্সব। দোলযাত্রার দিনে সকালে তাই রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহে আবির দেওয়া রীতি আছে। আর হোলি অবাঙালিদের উৎসব।
বৈষ্ণবদের মতে এই আনন্দ মুখর রঙিন দিনের পূজিত ঈশ্বর রাঁধা-কৃষ্ণ। এই তিথিতে বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ রাধা ও তাঁর গোপীদের সঙ্গে রঙ খেলায় মেতে উঠেছিলেন। এই রঙের উৎসবই দোলযাত্রার কেন্দ্রবিন্দু। দোল পূর্ণিমা তিথিতে মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যে দেবের জন্ম হয়েছিল তাই দোল পূর্ণিমাকে গৌরী পূর্ণিমা বলা হয়। হিন্দু পুরাণে প্রায় ২ হাজার বছর আগে গোকুলে হোলি খেলার কথা উল্লেখ রয়েছে। তবে এ নিয়ে বিতর্কও রয়েছে।
হোলি কথাটি “হোলিকা” শব্দ থেকে এসেছে। কিন্তু এই হোলিকা সম্পর্কে আমরা অনেকই জানি না। হোলিকা ছিলেন মহর্ষি কশ্যপ এবং দিতির ছেলে হিরণ্যকশিপুর বোন। আর হিরণ্যকশিপুর ছেলে ছিলেন প্রহ্লাদ। প্রহ্লাদ ছিলেন প্রভু বিষ্ণুর ভক্ত। দৈত্য রাজবংশে জন্মগ্রহণ করা সত্ত্বেও প্রভু বিষ্ণুর ভক্ত। সেই কারনেই তাঁর পিতা প্রহ্লাদের উপর ভীষণ ক্রুদ্ধ ছিলেন, কারন প্রহ্লাদ প্রভু বিষ্ণুর ধ্যানে এতটাই মগ্ন থাকতেন পিতার আচরণে ক্ষুব্ধ হতেন। তাই তাঁর পিতা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নিজের ছেলেকে হত্যা করবেন। নিজের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একাধিক ভাবে হত্যা করার চেষ্টা করলেও বিফলে যায় সমস্ত পরিকল্পনা। শেষমেষ হিরণ্যকশিপুর সিদ্ধান্ত নেন প্রহ্লাদকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলবেন। তাঁর কথা মতই হিরণ্যকশিপুর বোন হোলিকা ‘আগুনে মধ্য দিয়ে চললেও বিন্দুমাত্র ক্ষতি হবে না’ এমনই একটি বর পেয়েছিল। তাই হোলিকা নিজের ক্ষতি হবে না ভেবে প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দেয়। কিন্তু বর পাওয়া সত্ত্বেও শেষ রক্ষা হয়নি। প্রহ্লাদ বিষ্ণুর আশীর্বাদে বেঁচে যায়, আগুনে ভস্ম হয়ে যায় হোলিকা। সেই দিনটি থেকে পালন করা হয় হোলি।