Outlinebangla: চুল ধোয়ার সময়ে চুলে পড়ে যাওয়া, চুল আঁচড়ানোর সময় চুল ঝরা, মাথায় টাক পড়ে যাওয়া সাধারণত এই কয়েকটি চুলের সমস্যা নিয়ে আমরা কম বেশি সবাই ভুক্তভুগি (Hair loss or Thinning hair)। এটি একটি অত্যন্ত অপ্রীতিকর সমস্যা। দৈনিক ৫০-১০০ টি পর্যন্ত চুল পড়া খুবই স্বাভাবিক এর পরিবর্তে নতুন চুলও গজিয়ে যায়। কিন্তু সমস্যা তখনই শুরু হয় (Hair loss or Thinning hair) যখন অত্যাধিক চুল পড়ছে অথচ নতুন করে আর চুল গজাচ্ছে না।
এরকম পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের সাধের চুল ফিরিয়ে আনার উদ্দেশে কখনো ঘরোয়া উপায় তো কখনো নামি দামি বিভিন্ন ধরণের প্রোডাক্টের স্বরণাপন্ন হই (thinning hair)। তবে চুল পড়া বন্ধ করার জন্য আমাদের সবথেকে প্রথমে জানা প্রয়োজন যে কি কারণে এতো চুল পড়ছে? সেই মতো ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে চুল পড়া বন্ধ করতে হবে।

যে যে কারনগুলির জন্য চুল পড়তে পারে(alopecia, alopecia areata):
অপরিষ্কার স্ক্যাল্প, স্ক্যাল্পে ইনফেকশন চুল পড়ার অন্যতম একটি কারণের মধ্যে পড়ে। দৈহিক হরমোনের হটাৎ করে পরিবর্তন চুল পড়ার ক্ষেত্রে দায়ী হয়ে থাকে। যে কারণে প্রেগনেন্সি এবং প্রেগনেন্সির পরবর্তী সময়ের পাশাপাশি মেনপজের পরও মহিলাদের বেশি করে চুল উঠতে থাকে। এছাড়াও কঠিন অসুখ, বিভিন্ন রকম শারীরিক সমস্যা এবং অতিরিক্ত পরিমানে দুশ্চিন্তা থেকেও চুল উঠতে পারে আপনার। অনেক সময় জিনগত কারণেও চুল পড়তে পারে। একটি নিদিষ্ট বয়সের পর মহিলা হোক বা পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই যদি চুল পড়ার সমস্যা দেখা যায় এবং এই বিষয়টি তাদের বংশে আগেও দেখা যায় তাহলে এটিকে বংশগত সমস্যার সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুনঃ Liver function: সুস্থ থাকতে লিভারের যত্ন নেবেন যেভাবে
অত্যাধিক চুল পড়ছে কিনা, যেভাবে বুঝবেন(thinning hair):
আপনাকে খেয়াল করতে হবে আপনার চুল পড়ার পরিমানটা ঠিক কতটা! কারণ ১০০ টা পর্যন্ত চুল পড়া স্বাভাবিক। ১০০ এর বেশি হলেই চিন্তার বিষয়।
মাথার সামনের দিকে বা স্ক্যাল্পের চুল পাতলা হতে শুরু করেছে।
মাথার মধ্যে স্ক্যাল্প ইনফেকশন এবং খুশকির সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
ভ্রূর চুল থেকে চোখের পাতা সর্বত্রই চুল পড়তে শুরু করেছে।

কয়েকটি ঘরোয়া উপায় যেগুলো চুল পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে(alopecia treatment):
জবা ফুলের ব্যবহারঃ আমাদের পাতলা রুক্ষ শুষ্ক চুলকে মজবুত ও মসৃন করে তুলতে জবা ফুলের জুড়ি মেলাভার। এছাড়াও চুল পড়া বন্ধ করতে এবং চুলের খুশকি, চুলের ভেঙে যাওয়া রোধ করতে জবা ফুল কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। জবা ফুল যেহেতু একটি প্রাকৃতিক উপাদান তাই এটির ব্যবহার করা একদমই নিরাপদ।
ব্যবহার পদ্ধতিঃ
প্রথমে ৭ টি মতো জবা ফুল ও জবা পাতা নিয়ে নিতে হবে। এরপর আধ কাপ মতো নারকেল তেল গ্যাসে বসিয়ে গরম করতে হবে। এইসময় জবাফুল, জবাপাতা গুলোও দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। এবার তেলটা নামিয়ে ঠান্ডা করে স্ক্যাল্পে ও চুলে লাগিয়ে নিতে হবে। তারপর ৩০ মিনিট মতো রেখে সালফেট ফ্রি শ্যাম্পু দিয়ে চুলটা ধুয়ে নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ STD: সতর্ক থাকতে আগে ভাগে জানুন এই ৮ টি যৌন রোগ সমন্ধে
নিমপাতার তেলের ব্যবহারঃ
নিমপাতার তেল নতুন চুল গজানোর ক্ষেত্রে বহুকাল আগে থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও নিমের উল্লেখ রয়েছে। নিমে উপস্থিত উচ্চমাত্রায় ফ্যাটি অ্যাসিড স্ক্যাল্পের জন্য ভীষন উপকারী। চুলের গোড়া শক্ত করতে নিম খুব ভালো কাজ করে।
ব্যবহার পদ্ধতিঃ
প্রথমে ১০-১২ টি নিমপাতা বেটে পাতাগুলো থেকে নির্যাস বের করে নিন।পরিমান মতো নারকেল তেল, অলিভ অয়েল বা আলমন্ড অয়েল নিয়ে নিম পাতার এই মিশ্রনের সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে স্ক্যাল্পে লাগিয়ে নিতে হবে নিম এন্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান রূপে স্ক্যাল্পে কাজ করবে।

পেঁয়াজ রসের ব্যবহারঃ
চুল পড়া বন্ধ করতে এবং নতুন চুল গজাতে পেঁয়াজের রস খুবই ভালো কাজ করে। স্ক্যাল্পের যেকোনো রকম ইনফেকশন দুর করতে পেঁয়াজের রস খুবই উপকারী। পেঁয়াজের রসে উপস্থিত এন্টিব্যাকটেরিয়াল, এন্টিফাংগাল উপাদান এবং এন্টিঅক্সিডেন্টস চুল ঘন করতে সাহায্য করে।
ব্যবহার পদ্ধতিঃ
প্রথমে একটি বড়ো পেঁয়াজ নিয়ে তার রস বের করতে হবে। পেঁয়াজের রসটা এবার চুলের আগা থেকে গোড়া পর্যন্ত লাগিয়ে নিতে হবে। এরপর হাত দিয়ে স্ক্যাল্পে হালকা হালকা করে ম্যাসাজ করতে হবে। শেষে একঘন্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুলটা ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে।
আরও পড়ুনঃ Smell Disorders: যে সব কারনে আমরা মাঝে মাঝে স্বাদ-গন্ধ হারিয়ে ফেলি