নিজস্ব প্রতিবেদনঃ বীরভূমঃ প্রশাসনিক সূত্রে কিছু দিন আগে জানা যায় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর বীরভূমের মহঃবাজারে আসছেন। ঠিক সেইমতো আজ শুক্রবার তিনি কপ্টারে সিউড়ির চাঁদমারী ময়দানে এসে পৌঁছান। সেখান থেকে রওনা দেন সড়কপথে, যান মহঃবাজারে। বীরভূমের শহীদ রাজেশ ওরাংয়ের বাড়ি বেলগড়িয়া গ্রামে। সেখানে পৌঁছে প্রথমেই শহীদ রাজেশের ওরাং এর ছবিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন সস্ত্রীক রাজ্যপাল। এরপর পরিবারের লোকজনদের সাথে কথা বলন রাজ্যপাল।
উল্লেখ্য, গত জুন মাসের ১৫ তারিখ ভারত-চীন সীমান্তে পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের সেনা সংঘর্ষে শহীদ হন বীরভূমের মহম্মদ বাজারের বেলগড়িয়া গ্রামের বীর পুত্র রাজেশ ওরাং।
রাজেশের শহীদ হওয়ার খবর পৌঁছায় জুন মাসের ১৬ তারিখ অর্থাৎ তার পরের দিন বিকাল বেলায়। এই খবর পৌঁছাতেই শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েন পরিবার, গ্রাম, রাজ্য, সমগ্র দেশ। সেই সপ্তাহের শুক্রবার শহীদের কফিনবন্দি দেহ এসে পৌঁছায় তার গ্রামের বাড়ি মহঃবাজারের বেলগড়িয়া গ্রামে। তারপর তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাধিস্থ করা হয় তার গ্রামে প্রবেশের মুখে। রাজেশ ওরাংয়ের শহীদ হওয়ার পর তাঁর পাশে দাঁড়ায় রাজ্য সরকার। পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় এবং দু লক্ষ টাকা নগদ দেওয়া হয়। সরকারের পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের তরফ থেকেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফ থেকে এবং জেলা ও রাজ্যের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন- দিদিকে বলোর পর পৌরসভা কে বলো টোল-ফ্রি নম্বর রামপুরহাটে
আজ অর্থাৎ শুক্রবার রাজ্যপাল শহীদ রাজেশ ওরাংয়ের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বলেন, “রাজেশ ওরাং বীরভূমকে বীরভূমি করে দিয়েছেন। রাজেশ ওরাং দেশের জন্য শহীদ হয়েছেন। এই বীরভূম হলো সেই জায়গা যেখানে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতন করেছেন। বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বীরভূমের, মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বীরভূমের। বীরভূম সেই জায়গা যেখানে গীতগোবিন্দ রচিত হয়েছিল। আর এই বীরভূমকে আরও গৌরবোজ্জ্বল করলো রাজেশ ওরাং। দেশের জন্য প্রাণ দেওয়া ব্যক্তি সবথেকে বড় প্রেরণা।”
এছাড়াও তিনি এদিন বর্তমান করোনা আবহের কথা মাথায় রেখে সাধারণ মানুষকে সব সময় সামাজিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন। তিনি আরো বলেন, “করোনা আবহে এসকল মেনে না চললে আমরা, আমাদের পরিবার বিপদের মুখে পড়তে পারি। আর আমরা বিপদের মুখে পড়লে দেশ বিপদের মুখে পড়বে।”