Outlinebangla: বিনোদনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম হল সিনেমা বা চলচিত্র (Classic bengali movies)। ১৮৯০ সাল থেকে বাংলা চলচ্চিত্র তাদের যাত্রাপথ শুরু করেছে। তখনকার সময় থিয়েটারের মঞ্চে বাইস্কোপ দেখানো হত। ১৯৩১ সালে মুক্তি পায় ‘দেনা পাওনা’ এটি প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ছবি। ঠাকুমা দাদুদের মুখে প্রায় আমরা শুনে থাকি যে এখনকার কি সিনেমা দেখিস তোরা? সিনেমা ছিল আমাদের সময়ে! একবার দেখলে বারবার দেখতে মন চাইবে (Classic bengali movies)। সেরকম সিনেমা এখন আর কই! ১৯৫২ থেকে ১৯৭৫ সাল কে বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগ বলা হয়। স্বর্ণালী যুগের কয়েকটা মনে দাগ কাটার মত সিনেমা হল (Classic bengali movies)।
১৫ টি ক্লাসিক বাংলা সিনেমা:(Classic bengali movies)
পথের পাঁচালী
পরশ পাথর
সোনার কেল্লা
তিন কন্যা
পদ্মা নদীর মাঝি
দ্বীপ জ্বেলে যায়
সাড়ে ৭৪
কাবুলিওয়ালা
ঘরে বাইরে
জলসাঘর
হীরক রাজার দেশে
অপুর সংসার
মেঘে ঢাকা তারা
গুপী গাইন বাঘা বাইন
সপ্তপদী
পথের পাঁচালী: (Pather Panchali) বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর পথের পাঁচালী উপন্যাস কে কেন্দ্র করে সত্যজিৎ রায় পথের পাঁচালী সিনেমাটি তৈরি করেন। এটি মুক্তি পায় ১৯৫৫ সালে। এই সিনেমায় প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। অপু দুর্গার একসাথে বড় হয়ে ওঠা, তাদের চঞ্চল শৈশব, দুর্গার মৃত্যু ইত্যাদি দেখানো হয়েছে। এই সিনেমায় প্রধান চরিত্র দেখা গেছে সুবীর ব্যানার্জি (অপুর চরিত্রে), করুনা ব্যানার্জি (অপুর মায়ের চরিত্রে), এবং উমা দাশগুপ্ত কে (দুর্গারচরিত্রে)। এই সিনেমাটি ১৯৫৫ সালে বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করে। ১৯৫৬ সালে শ্রেষ্ঠ মানবিক দলিল ওশি আইসি পুরস্কার সহ একাধিক পুরস্কার লাভ করে।
আরও পড়ুনঃ World Record: ‘সেলফি’তে Akshay! ছবির প্রচারে নেমে গড়লেন বিশ্ব রেকর্ড..
পরশপাথর:(Parash Pathar) ১৯৫৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমাটি রাজশেখর বসুর লেখা ছোটগল্প পরশ পাথরকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে (Classic bengali movies)। এই সিনেমায় প্রধান চরিত্রে দেখা গেছে তুলসী চক্রবর্তী (পরেশ চন্দ্র দত্ত ), রানিবালা দেবী (গিরি বালা দত্ত, পরেশ এর স্ত্রী)। এছাড়া পুলিশ অফিসার হিসেবে বীরেশ্বর সেনকে অভিনয় করতে দেখা গেছে। কান চলচ্চিত্র উৎসবে এটি পাম ডি অ’র (শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র) বিভাগে প্রতিযোগিতা করে।
সোনার কেল্লা:(Sonar kella) ১৯৭১ সালে সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় সোনার কেল্লা সিনেমাটি মুক্তি পায়। এই ছবির কেন্দ্রবিন্দু এক জাতিস্মর শিশু, তাকে উদ্ধারের কাহিনী দেখানো হয়েছে গোটা সিনেমা জুড়ে। সিনেমাটি রহস্যে রোমাঞ্চে ভরপুর (Classic bengali movies)। এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গেছে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শৈলেন মুখার্জি,কানু মুখার্জির মত ব্যক্তিদের।
তিন কন্যা:(Teen Kanya) এই গল্পের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে তিনটি প্রধান নারী চরিত্র। প্রথম পর্ব তে পোস্টমাস্টার (কিশোরী হিসাবে), দ্বিতীয় পর্ব তে মনিহারা (বিবাহিতা হিসেবে) এবং শেষ পর্বে সমাপ্তি (ষোড়শী)। ছবিটি রবীন্দ্রনাথের ছোট গল্প থেকে নেওয়া এবং এটি সত্যজিৎ রায় পরিচালনা করেন। রবীন্দ্রনাথের ১০০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সিনেমাটি মুক্তি পায়। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়,অপর্ণা সেন, অনিল চট্টোপাধ্যায় এই ছবিতে অভিনয় করেছেন।
আরও পড়ুনঃ Ranbir Kapoor: ফুটবলপ্রেমি রণবীর ক্রিকেটও কম যায় না! তাহলে কি বাঙালির বায়োপিকে এবার রণবীর?
পদ্মা নদীর মাঝি:(Padma Nadir Majhi) ১৯৯৩ সালে মুক্তি প্রাপ্ত গৌতম ঘোষ পরিচালিত এই সিনেমাটি মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি করা হয়েছে (Classic bengali movies)। অভিনয়ের মাধ্যমে চরিত্র গুলোকে জীবন্ত করে তুলতে সাহায্য করেছেন রাইসুল ইসলাম, আসাদ,রুপা গঙ্গোপাধ্যায় উৎপল দত্ত প্রমুখ শিল্পীরা।
দীপ জ্বেলে যাই:(Deep Jele Jai) আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের ছোটগল্প অনুসরণে তৈরি করা চলচ্চিত্রটি ১৯৬৯ সালে অমিত সেনের পরিচালনায় মুক্তি পায়।মু খ্য চরিত্রে দেখা গেছে অনিল চট্টোপাধ্যায় এবং সুচিত্রা সেন কে।
সাড়ে চুয়াত্তর:(Shaarey Chuattar) এটি একটি হাস্যকৌতুক সিনেমা। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পায়। ছবিটি পরিচালনা করেছেন নির্মল দে, এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গেছে উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন,তুলসী চক্রবর্তী মলিনা দেবীর মতো শিল্পীদের।

Classic Bengali Movies
কাবুলিওয়ালা:(kabliwal) এই সিনেমাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাবুলিওয়ালা ছোট গল্প অবলম্বনে তৈরি। প্রধান চরিত্রে আছেন ছবি বিশ্বাস, রাধামোহন ভট্টাচার্য, ঐন্দ্রিলা ঠাকুর। ১৯৫৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এই সিনেমা জাতীয় পুরস্কার লাভ করেছে।
ঘরে বাইরে:(Ghare Baire) সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়, সাথী লেখা সেনগুপ্ত অভিনীত ছবিটিতে স্বদেশী আন্দোলনের পটভূমিতে কিভাবে সমাজের পরিবর্তিত রূপ, নারীদের মনের জটিল চিন্তাভাবনা কে তুলে ধরা হয়েছে। ছবিটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি। এটি ১৯৮৪ সালে মুক্তি পায় সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ।
কালজয়ী সিনেমা যে গুলি না দেখলই নয় (Classic bengali movies)
জলসাঘর:(jalsaghar) জলসাঘর সত্যজিৎ রায় পরিচালিত চতুর্থ চলচ্চিত্র। ছবিটি শুটিং করা হয়েছিল নিমতিতা রাজ বাড়িতে। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৫৮ সালে (Classic bengali movies)। এই ছবিতে অভিনয় করছেন গঙ্গাপদ বসু, কালি সরকার, পদ্মা দেবী, ছবি বিশ্বাস প্রমূখ।
হীরক রাজার দেশে:(Hirak Rajar Deshe) এই সিনেমায় ছড়ার মাধ্যমে প্রত্যেকটা সংলাপ কে তুলে ধরা হয়েছে, শিক্ষক চরিত্রটা বাদ দিয়ে। এটি একটি রুপাকাশ্রীত চলচিত্র। সিনেমার মুখ্য চরিত্র দেখা গেছে উৎপল দত্ত, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, তপন চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ।

Bengali Evergreen Films
অপুর সংসার:(Apur Sansar) সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শর্মিলা ঠাকুর, অলক চক্রবর্তী অভিনীত চলচ্চিত্রটি সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় মুক্তি পায় ১৯৫৯ সালে। অপু ট্রিলজির অন্তিম পর্ব এটি। ১৯৫৯ সালে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৯৬০ সালের লন্ডন চলচ্চিত্র উৎসব এর ব্রিটিশ ফিল্ম ইনস্টিটিউট পুরস্কার পাই।
মেঘে ঢাকা তারা:(Meghe Dhaka Tara) ১৯৬০ সালে ভারত পাকিস্তান বিভাজনের প্রেক্ষাপটে তৈরি এই সিনেমা মুক্তি পায়। সিনেমাটি অভিনয় করেছিলেন সুপ্রিয়া চৌধুরী, বিজন ভট্টাচার্য, গীতা দে প্রমূখ। ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত সব থেকে জনপ্রিয় সিনেমা এটি।
গুপী গাইন বাঘা বাইন:(Goopy Gyne Bagha Byne) ১৯৬৮ সালে সত্যজিৎ রায় পরিচালিত সিনেমা গুপী গাইন বাঘাবাইন কে আমারা ছোটদের সিনেমা বলেই জানি। কিন্তু এই সিনেমার গান ও ভুতুড়ে নৃত্যে হাসতে বাধ্য সকল বয়সের মানুষেরা। ছবিটি উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী রূপকথা অবলম্বনে নির্মিত। এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গেছে জহর রায়, স্বপন চট্টোপাধ্যায়, রবি ঘোষ,সন্তোষ দত্ত প্রমূখ।
সপ্তপদী:(Saptapadi) অজয় কর পরিচালিত লাভ স্টোরি কেন্দ্রিক ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গেছে উত্তম কুমার, সুচিত্রা সেন, তরুণ কুমার প্রমুখ। সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৬১ সালে। এই সিনেমায় জনপ্রিয় একটি গান ‘এই পথ যদি না শেষ হয় ‘আজও বাঙালি মনে প্রেমের আভাস সৃষ্টি করে।