Outlinebangla: আজকালকার দিনে সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা প্রত্যেকেই অ্যাক্টিভ। ঘন্টার পর ঘন্টা ব্যয় করি সোশ্যাল মিডিয়ার অন্যতম অ্যাপ ফেসবুকে ভিডিও দেখে। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি ফেইসবুক আমাদের পছন্দমতো ভিডিও আমাদের কি করে দেখায় (AI Applications) অন্য দিকে গুগল সার্চেও আমরা যখন কোনো কিছু সার্চ করি তখন গুগল ও অনেক ওয়েবসাইটকে বিভিন্ন দিক থেকে বিচার করে আমাদের সার্চের সঠিক ফলাফল প্রকাশ করে। কিন্তু কখনো ভেবে দেখেছেন কি এগুলো সম্ভব হচ্ছে কি ভাবে? এই বিষয়টিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলা হয়, Artificial intelligence.
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আসলে কি (Artificial intelligence):
কম্পিউটার সায়েন্সর একটি অংশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। এখানে কৃত্রিম অর্থাৎ মানুষের দ্বারা তৈরী কোনো জিনিষ অপরদিকে বুদ্ধিমত্তা মানে কোনো বিষয়কে নিয়ে চিন্তা ভাবনা করার যে শক্তি তা মিলে তৈরি হয় Ai applications, এটি এমন একটি মেশিন যেটি মানুষের মতো বুদ্ধিমান এবং মানুষ যা যা কাজ পারে এই মেশিনটিও সেগুলো করতে পারে অর্থাৎ Artificial intelligence robot.
১৯২০ সালে কারেল ক্যাপেকের একটি সাইন্স ফিকশন “রুশম ‘স ইউনিভার্সাল রোবটস “থেকে প্রথমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ধারণা পাওয়া যায়। পুনরায় ১৯৪৭ সালে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কে নিয়ে বক্তব্য দেন ইংরেজ গণিতবিদ এলেন টিউরিং। এরপর থেকেই বিজ্ঞানীরা এই বিষয়টিকে নিয়ে গুরুত্ব সহকারে গবেষণা শুরু করে, কম্পিউটার আবিষ্কারের পরবর্তী সময় থেকে আস্তে আস্তে তা আরও বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছিলো।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার(Uses of artificial intelligence):
আজকাল অনেকের হাতে ঘোরাঘুরি করে আইফোন। আর এই আইফোনের জনপ্রিয় ফিচার SIRI personal assistant এর কথা নিশ্চয়ই অজানা নয়। এই SIRI কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অন্যতম উদহারণ গুলির মধ্যে একটি। যেটির মাধ্যমে ফোনের যাবতীয় কার্যকলাপ এতদিন যেগুলো আপানি হাত দিয়ে করতেন সেই একই জিনিষ করতে পারবেন শুধু মাত্র মুখে কোঠা বলে। যেমন কোনো কিছু সার্চ করা, মেসেজ আদান প্রদান,কোনো অ্যাপ খোলা ইত্যাদি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার কেবলমাত্র স্মার্ট ফোন গুলিতেই নয় অটোমোবাইল সেক্টর গুলোতেই করা হয়ে থাকে। আপনি যদি গাড়িপ্রেমীদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন তাহলে Tesla Car এর কথা নিশ্চয় শুনে থাকবেন। এই গাড়িটি কোনো মানুষের সাহায্য ছাড়াই নিজে নিজে চলে যেটাকে self-driving বলা হয়। তবে আপনি যেখানে যেতে চান এককথায় আপনার গন্তব্যস্থল সেখানকার লোকেশনটি সেট করে দিতে হবে।
অতি পরিচিত ই কমার্স প্লাটফর্ম আমাজন ECHO নামক একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত প্রোডাক্ট বাজারে লঞ্চ করেছে, যেটি বিভিন্ন অডিও বুক পড়তে পারে, কোনো প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে, সময় , খেলার খবর, আবহাওয়া ইত্যাদি বলতে পারে।
এছাড়াও গুগল ম্যাপে,ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি গুলো তে, রোবট তৈরিতে, এমনকি হেলথ ইন্ডাস্ট্রিগুলোতেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা Artificial Intelligence এর ব্যবহার করা হয়।
পড়ুন- Hair loss or Thinning hair: যেভাবে আমরা চুলের যত্ন নেবো?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুবিধা (Advantages of Artificial intelligence robot) :
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত মেশিন গুলো তে কোনো বিশ্রাম ছাড়াই ঘন্টার পর ঘন্টা কাজ করা যায় যেহেতু এদের মানুষের মতো ক্লান্তি লাগে না। যে কারণে Productivity মানুষের তুলনায় দ্বিগুন হয়। এটি কৃষি, টেকনোলজি, সহ নানান ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে আমূল পরিবর্তন আনতে পারে।
এগুলির দ্বারা অতি দ্রুত ও নিখুঁতভাবে কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত মেশিন গুলিতে ভুল ভ্রান্তি হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম বললেই চলে।
আরও পড়ুন- Food History & Culture: আহারের কতই না বাহার! জানুন বাঙালীর খাদ্যাভ্যাসের ইতিহাস..
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অসুবিধা (Disadvantages of Artificial intelligence robot):
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সবচেয়ে বড়ো অসুবিধা হলো এটি ভবিষ্যতে বেকারত্বের সংখ্যার বৃদ্ধি ঘটাবে কারণ এটি অনেকের দৈনন্দিন রোজগার কেড়ে নেবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অনেক জটিল ভাবে তৈরী একটি প্রক্রিয়া, ফলে এটি যথেষ্ট ব্যয়বহুল একটি পদ্ধতি। পাশাপাশি এর মেরামত খরচও অধিক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাযুক্ত মেশিনগুলো নিজে থেকেই চিন্তা ভাবনা করবে এটি মানুষের চিন্তার মূল কেন্দ্রবিন্দু হতে পারে যদি এদের কে কন্ট্রোল না করা যায়।
আমাদের সমাজের বিশেষজ্ঞ ব্যাক্তিদের মত অনুযায়ী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত রোবটগুলি যদি টেকনিকাল কারণে ভুলবশত মানুষকেই তার শত্রু ভেবে বসে মানুষের উপর আক্রমণ করে তাহলে মানুষের জীবন নিয়ে টানাটানি শুরু হবে, এমনকি মানবপ্রজাতি সংকটের মধ্যেও পড়তে পারে।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে ঘিরে গোটা পৃথিবীজুড়ে প্রতিনিয়ত চর্চা চলতেই থাকে। বেশ কয়েকটি মুভিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার লক্ষ্য করা গেছে যেমন Minority Report and blade Runner, Robot, Matrix ইত্যাদি। মুভিগুলোতে মানুষের মতো রোবট কিভাবে সমস্ত দিক সামালাচ্ছে তাই মূল বিষয়।